এম জাফরান হারুন, বাউফল, পটুয়াখালীঃ পটুয়াখালীর বাউফল উপজেলার বগা বন্দর বাজারে মোতালেব ও লতিফ হাওলাদারের ভাড়াটিয়ার দোকানঘরে তালা দেওয়া সহ ভাড়ার টাকা উত্তোলনের অভিযোগ পাওয়া গেছে। এতে ভুক্তভোগীদের অভিযোগের কথা অস্বীকার করেছেন প্রতিপক্ষ আনিচ মৃধা।
ভুক্তভোগীরা জানান, আমরা মোতালেব ও লতিফ হাওলাদারের নামে জমিদাতা মোজাম্মেল হক ওরফে নয়া মোল্লার কাছ থেকে ১৯৯৩ সালে এই জায়গাটি মোট ১৬ শতাংশ জমি ক্রয় করি। ক্রয় করার পরপরই দোকান ও ঘর নির্মাণ করে বিভিন্ন জনের কাছে ভাড়া প্রদান করে আসছি। এবং আনিচ মৃধার বাবা মঙ্গল মৃধার কাছ থেকেও সম্ভবত ১৯৯৩ সালে ১৩ শতাংশ জমির একটা দলিল করি। কিন্তু ৫ই আগষ্ট ২০২৪ ইং তারিখের পরে প্রথমে বিএনপি-র অফিস করার জন্য টেবিল চেয়ার রুমের মধ্যে ঢুকানোর চেষ্টা করে এতে ব্যর্থ হয়ে ভাড়াটিয়াদের কাছ থেকে চাদা দাবি করে এবং ভাড়াটিয়াদের কাছ থেকে প্রতি মাসে মাসে টাকা নেয়।
এদিকে আমাদের ভাড়াটিয়া মালেক মুন্সী টাকা দিতে অস্বীকার করলে বগা ইউনিয়ন বিএনপির সেক্রেটারী বাবল মৃধা, বগা ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতির ভাইয়ের ছেলে বাবুল, নাসির ও বিএনপির ২০/২৫ জন লোক এসে ভাড়াটিয়া মালেক মুন্সীর রুমে তালা দেয়। পরে মালেক মুন্সী বাউফল সেনাবাহিনী কে বিষয়টি জানালে সেনাবাহিনী এসে দোকান খুলে দেয়। আবার পরের দিনই দোকান বন্ধ করার জন্য ওই একই লোকেরা দোকান বন্ধ করার জন্য চাপ দেয়। দোকান বন্ধ না করলে মালামাল লুট করারও হুমকি দেয়। আমরা এ থেকে পরিত্রাণ চাই।
তবে এব্যাপারে সরেজমিনে গিয়ে মালেক মুন্সীর সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করেও ব্যর্থ হয়ে প্রতিবেদক তার দোকানের কর্মচারীর কাছে উক্ত বিষয়ে জানতে চাইলে বলেন, আমরা দোকান ছেড়ে দিয়েছি এবং মালামাল নিয়ে চলে যাবো বলে আর কোনো কথা বলেননি।
পাশের দোকানদার ভাড়াটিয়া মামুন বলেন, মোতালেব ও লতিফ হাওলাদার দীর্ঘদিন ধরে দোকানঘর তুলে তা ভাড়া দিয়ে ভাড়ার টাকা তুলে আসছেন। কিন্তু আওয়ামী সরকার পতনে ৫ই আগষ্টের পর থেকে আনিচ মৃধা তার পৈত্রিক সম্পত্তি দাবি করে এখন ভাড়া তুলে আসছেন।
স্থানীয়রা জানান, আমরা জানি এবং দেখেছি যে মোতালেব ও লতিফ হাওলাদার এইসব দোকানঘর তুলে ভাড়াটিয়াদের কাছ ভাড়া দিয়ে দীর্ঘদিন ধরে প্রতি মাসে মাসে ভাড়া তুলে আসছেন। এখন শুনি এইসব জমি নাকি আনিচ মৃধার পৈত্রিক সম্পত্তি। তাই এখন আনিচ মৃধা ভাড়াটিয়াদের কাছ থেকে ভাড়ার টাকা তুলছেন।
এবিষয়ে প্রতিপক্ষ আনিচ মৃধা অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, এইসব জমিতে যে দোকানঘর দেখছেন তা মোতালেব ও লতিফ হাওলাদার আওয়ামী লীগ সরকার আসার পর জবরদখল পূর্বক দোকানঘর তুলে এই দীর্ঘ ১৫/১৬ বছর পর্যন্ত ক্ষমতার প্রভাব খাটিয়ে ভাড়া তুলে আসছিল। তা ৫ই আগষ্ট ফ্যাসিস্ট আওয়ামী সরকার পতনের পরই আমার পৈত্রিক সম্পত্তি আমি আমার আয়ত্তে রাখার চেষ্টা করছি।
এসময় আনিচ মৃধা তার ডান পা প্রতিবেদককে দেখিয়ে বলেন, এই মোতালেব হাওলাদার আমাকে হত্যা করার জন্য আমার ওপর হামলা চালিয়ে আমার পা খানা ভেঙেচুরে ফেলে। আজ আমি পঙ্গুত্ব বরণ করে আছি। আমার পরিবারের লোকজনের ওপরও একেরপর এক হামলা করে আসছিল বলে হু হু করে কেঁদে ফেলেন।