অপূর্ব সরকার, পটুয়াখালীঃ পটুয়াখালীতে পরকিয়া প্রেমের জেরে প্রেমিক আবু জাফর মোল্লা (৬৫) কে হত্যার অভিযোগে প্রেমিকা রুনা বেগম(৪০) ও তার স্বামী ফয়জর মোল্লা ওরফে হুমায়ুন কবির (৫০) কে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। বুধবার ভোর রাতে সদর উপজেলার জৈনকাঠি ইউনিয়নের কেশবপুর গ্রাম থেকে তাদেরকে আটক করা হয়। আসামীদের আদালতে সোপার্দ করা হলে তারা বিচারকের কাছে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দী প্রদান করে। বুধবার রাত ৯ টায় পটুয়াখালী সদর থানায় আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোঃ জসিম এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
ওসি বলেন, "গত ১২ মার্চ কেশবপুর গ্রামে একটি মাঠের মধ্যে আবু জাফর মোল্লা (৬৫) নামের এক বৃদ্ধের মৃতদেহ পাওয়া যায়। হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে বৃদ্ধের মৃত্যু হয়েছে আত্মীয়-স্বজন প্রাথমিকভাবে এমন ধারনা করলেও পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে ও সার্বিক বিষয়ে পর্যবেক্ষণ করে বিষয়টিকে হত্যাকাণ্ড বলে সন্দেহ করে। মৃতদেহ ময়না তদন্তের জন্য পটুয়াখালী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে প্রেরণ করে। পরবর্তীতে নিহত আবু জাফর মোল্লার ছেলে কবির মোল্লা বাদী হয়ে অজ্ঞাত আসামীদের বিরুদ্ধে পটুয়াখালী থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলা নং-১৪, তারিখ- ১২-মার্চ, ২০২৪। মামলা আমলে নিয়ে তদন্তে নামে পুলিশ। প্রযুক্তি ও সোর্সের সহায়তায় মামলার রহস্য উদঘাটন করে বুধবার ভোর রাতে ফয়জর মোল্লা ও রুনা বেগমকে গ্রেফতার করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদে তারা হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে এবং আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দী দেয়।"
আসামিরা জানায়, মৃত জাফর মোল্লার সাথে রুনা বেগমের দীর্ঘদিন ধরে অবৈধ পরকিয়ার সম্পর্ক ছিলো। সেই সম্পর্কের কারণে রুনার পারিবারিক জীবনে ঝামেলার সৃষ্টি হয়। মৃত জাফর মোল্লাকে রুনার স্বামী ফয়জর মোল্লা বার বার নিষেধ করলেও তিনি অবৈধ প্রেমের সম্পর্ক চালিয়ে যায়। ঘটনার দিন ১২ মার্চ মাগরিবের নামাজের পরে জাফর মোল্লা আসামী রুনা বেগমের ফোনে কল দিলে তাকে বাড়ির পিছনে ডাকে। বাড়ির পিছনে গেলে রুনা তাকে মাঠের মধ্যে নিয়ে যায়। রুনার স্বামী ফয়জর মোল্লা হাতে দা নিয়ে তাদের পিছু পিছু মাঠে যায়। ফয়জরকে দেখে জাফর মোল্লা আতঙ্কিত হয়ে পড়ে। পালানোর চেষ্টাকালে ফয়জর মোল্লা তার গলা চেপে ধরে মাটিতে শুইয়ে ফেলে এবং হাতে থাকা দায়ের উল্টো পিঠ দিয়ে গলায় আঘাত করে। এ সময়ে রুনা ভিকটিমের দু হাত চেপে ধরে রাখে। মৃত্যু নিশ্চিত হওয়ার পরে তাহারা লাশ ফেলে রেখে বাড়িতে চলে আসে।