জালাল আহমেদ, প্রধান প্রতিবেদকঃ সরকার পরিবর্তনের পরে জেলা ও পুলিশ প্রশাসনের কার্যক্রমের স্থবির অবস্থা কাটিয়ে স্বাভাবিক অবস্থা ফিরিয়ে আনতে পটুয়াখালীতে জেলা প্রশাসন ও পুলিশ প্রশাসনের উদ্যোগে শহরেরর বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ন স্থান পরিদর্শন করছেন জেলা প্রশাসক মো. নুূর কুতুবুল আলম ও পুলিশ সুপার মো. আব্দুস সালাম সহ জেলা প্রশাসনের উর্ধ্বতন কর্মকর্তাবৃন্দ। এ সময় অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন জেলা বিএনপির সদস্য সচিব স্নেহাংশু সরকার কুট্রিসহ গণমাধ্যম কর্মীরা।
রবিবার জেলা প্রশাসকসহ প্রশাসনের উর্ধ্বতন কর্মকর্তাবৃন্দ জেলার বিভিন্ন খেয়াঘাট, মন্দির, লঞ্চঘাট, বাস টার্মিনাল পরিদর্শন করে স্থানীয় জনগনসহ সনাতন ধর্মীয় লোকজনের সাথে কথা বলে জনসাধারণের স্বাভাবিক জীবন যাত্রা চালু করতে সব ধরনের সহযোগীতা প্রদানের আশ্বাস দেন।
জেলা প্রশাসক মো. নুর কুতুবুল আলম বলেন, পটুয়াখালী শহরের অনেকগুলি মন্দির পরিদর্শন করেছি, আমার সাথে পুলিশ সুপার, জেলা বিএনপির সদস্য সচিব রয়েছেন। বিভিন্ন স্থানে গুজবের কারনে হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের মধ্যে এক ধরনের আতংক সৃষ্টি হয়েছে। পটুয়াখালীতে কোনকিছু হয়নি, এখানে ভয়ের কিছু নাই। তারা নির্ভয়ে তাদের ধর্মচর্চা করতে পারেন, জীবন যাপন করতে পারেন। এই বিষয়টি তাদের জানান। তাদেরকে আমরা আশ্বস্থ করলাম আমরা মাঠে আছি, সেনাবাহিনী, পুলিশ, আনসার বাহিনী কাজ করছে, সাংবাদিক ভাইরা সচেতন রয়েছে। আমরা হিন্দু ধর্মবলাম্বী ভাইদের পাশে আছি, তারা এদেশের নাগরিক, আমাদের মধ্যে কোন ভেদাভেদ নেই, তারা ভয়ভীতির উর্ধ্বে থেকে স্বাভাবিক জীবন যাপন করে। বিভিন্ন জায়গায় পরিদর্শন করেছি, কোন অভিযোগ পাইনি।
পুলিশ সুপার মো.আব্দুস সালাম জানান, ৫ আগস্টের পর থেকে পটুয়াখালীর আইনশৃংখলা পরিস্থিতি যাতে ভাল থাকে তা এখানকার আপামর জনসাধারণ কাধেঁকাধঁ মিলিয়ে রক্ষা করেছেন। আমাদের কিছুটা সীমাবদ্ধতার কারনে আউট মুভমেন্ট কম ছিলো। গতকাল থেকে স্বাভাবিক মুভমেন্ট শুরু হয়েছে। থানা পুলিশ তিন-চার দিন আগে থেকেই কাজ শুরু করেছে। প্রত্যেকদিনই আমরা বিচ্ছিন্নভাবে বের হই, আজকে আমরা জেল প্রশ্রাসক, আমাদের সহকর্মী সহ রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ, সাংবাদিক নেতৃবৃন্দ, সুশীল সমাজের প্রতিনিধিদের নিয়ে আমরা সম্মিলিতভাবে বের হয়েছি। আমরা পটুয়াখালী শহরের গুরুত্বপূর্ন সকল মন্দিরসহ হিন্দু সম্প্রদায়ের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, গুরুত্বপূর্ন সব খেয়াঘাট, লঞ্চঘাট পরিদর্শন করেছি, কোথাও কোন দূর্ঘটনার খবর আসেনি। সবাই বলেছে, তারা শান্তিতে আছে এবং তাদের উপর কোন আক্রমন বা ভয়ভীতর ঘটনা ঘটেনি। সে ক্ষেত্রে আমরা বলতে পারি সংখ্যালঘু সম্প্রদায়সহ সকলে ভাল আছেন।
তিন জানান, পটুয়াখালীতে ৯টি থানা, চারটি তদন্ত কেন্দ্র, ১টি ফাড়ী রয়েছে। শুরু থেকে সকল জনবল আমাদের থানা ফাড়ি বা পুলিশ লাইনে রয়েছে। আমাদের কোন স্থাপনার কোন ক্ষতি হয়নি। গাড়ী, অস্ত্র, গুলি, পুলিশের সকল স্থাপনা অক্ষত রয়েছে।
পটুয়াখালী জেলা বিএনপির সদস্য সচিব স্নেহাংশু সরকার কুট্রি বলেন, শেখ হাসিনার পদত্যাগের পর আইন-শৃংখলা রক্ষায় পটুয়াখালীর জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপার, মিডিয়ার সদস্যদেরসহ আমি সবাই মিলে জেলার আইনশৃংঙ্খলা পরিস্থিতি যে স্বাভাবিক রয়েছে তা জনগনের মধ্যে আস্থা ফিরিয়ে আনতে বের হয়েছি। জেলা প্রশাসনের সাথে সকল মন্দির, খেয়াঘাটসহ গুরুত্বপূর্ন ব্যবসায়িক কেন্দ্রগুলি পরিদর্শন করেছি। বিগত দিনে ভোটার বিহীন শেখ হাসিনার আমলে পটুয়াখালী বাসস্ট্যান্ডে ব্যাপক চাঁদাবাজীর কারনে মালিকরা নি:স্ব হয়ে গেছে, রক্তপাত হয়েছে। আমাদের সকল অংগসংগঠনের নেতৃবৃন্দ সাধারণ মানুষের জানমালের নিরাপত্তা রক্ষার্থে ২৪ ঘন্টা কাজ করে যাচ্ছি। আমাদের কাজ অব্যাহত থাকবে।