জালাল আহমেদ, প্রধান প্রতিবেদকঃ পঞ্চগড়ের শিশু মো. মস্তফা পটুয়াখালীর খলিসাখালী আল হিকমাহ মোল্লা একাডেমী হিফজুল কুরআন বালক ও বালিকা মাদরাসা এতিমখানা ও লিল্লাহ বোডিং থেকে নিখোঁজের ১৬ দিনেও খোঁজ মেলেনি তার। শিশুর বাবা ও মাসহ স্বজনা নির্ঘুম দিন কাটাচ্ছেন।
উক্ত মাদরাসার শিক্ষক হাফেজ মো. সোহেল হুসাইন জানান, শিশু মস্তফার বড় ভাই হাফেজ মো. রাশিদুল ইসলামের সাথে একত্রে ঠাঁকুরগাঁও সিদ্দিকিয়া বিশ্ব ইসলাম মিশন কমপ্লেক্সে চাকুরী করতেন। এ চাকরীর সুবাধে মো. মস্তফা’র পরিবারের সদস্যদের সাথে তার চেনা জানা হয়। মস্তফার অন্যান্য ভাই বোনও মাদরাসা লাইনে পড়াশুনা করে। মস্তফাকে স্থানীয় বিভিন্ন মাদরাসায় ভর্তি করে। কিন্তু মস্তফা কিছুদিন পর পর মাদরাসা থেকে পালিয়ে বাড়ি চলে আসে। এ অবস্থায় মস্তফা’র মা মোসাঃ রুমা বেগম হাফেজ সোহেলের সাথে আলাপ আলোচনা করে মস্তফাকে দূরের মাদরাসায় ভর্তি করলে পালাবে না। এতে রুমা বেগম রাজি হয় এবং হাফেজ সোহেল ও বড় ভাই হাফেজ মো. রাশিদুল ইসলাম ২৫.০৮.২০২৪ইং তারিখ মস্তফাকে পটুয়াখালীতে নিয়ে আসে এবং বদরপুর ইউনিয়নের খলিসাখালী মোল্লা বাড়ি মাদরাসায় হিফজ শাখায় ভর্তি করে।
হাফেজ সোহেল জানান, ২৯ সেপ্টেম্বর মাগরিব’র আজানের আগে মস্তফা কাউকে না বলে মাদরাসা থেকে চলে যায়। অনেক খােঁজাখুঁজি করে কোনো সন্ধান না পেয়ে এ ঘটনা মস্তফার মা মোসাঃ রুমা বেগমকে অবহিত করা হয়।
রুমা বেগম জানান, হাফেজ সোহেল মস্তফার খোঁজ না পাওয়ার কথা জানালে আমি ও আত্মীয় স্বজনরা মস্তফার খােঁজ খবর না পেয়ে পঞ্চগড় থানা পুলিশকে বিষয়টি অবহিত করি।
মস্তফার বাবা মনসুর আলম ছেলে মস্তফার কোন খোঁজখবর না পেয়ে দুঃচিন্তায় দিন কাটাচ্ছেন। এ অবস্থায় মনসুর আলম ঢাকায় তার পরিচিত ব্যক্তিদের সাথে যোগাযোগ করেন। এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত মস্তফার কোন খোঁজ পাওয়া যাচ্ছে না বলে জানান তিনি। তিনি ছেলে মস্তফাকে খোঁজ করে ছেলেকে ফিরিয়ে দেয়ার জন্য হাফেজ সোহেলকে চাপ দিলে সোহেল তার ফোন রিসিভ করছেন না বলে মনসুর আলম জানান।
নিখোঁজ শিশু মস্তফার মা রুমা বেগম জানান, আমার দুটি ছেলে মেয়ে হাফেজ। ছোট ছেলে মস্তফাকে হাফেজ বানানোর জন্য এলাকার মাদরাসায় ভর্তি করি। কিন্তু কিছুদিন পড়ার পর ও পালিয়ে বাড়িতে আসে। তাই আমার ছেলে হাফেজ রাশিদুল ইসলাম ও তার বন্ধু হাফেজ সোহেল দুইজনকে দিয়ে মস্তফাকে দূরের মাদরাসায় পটুয়াখালীর খলিসাখালী মোল্লা বাড়ি মাদরাসায় ভর্তি করানো হয়। হাফেজ সোহেল ভাল ছেলে, মস্তফাকে সোহেল খুব স্নেহ করে, ভালবাসে। মস্তফার নিখোঁজ হওয়ার কথা আমাকে জানিয়েছে। প্রায় প্রতিদিন হাফেজ সোহেল আমার সাথে কথা বলে মস্তফাকে পাওয়া গেছে কি না জানতে চেষ্টা করে। আমি মস্তফাকে আল্লাহর পথে ছেড়ে দিয়েছি। ওর কিছু হবে না।
এদিকে হাফেজ মো. সোহেল মস্তফার অভিভাবক হয়ে ১২.১০২০২৪ ইং তারিখ পটুয়াখালী সদর থানায় একটি সাধারণ ডায়েরী করেছেন বলে জানান। ডায়েরী নং-৫৩৮।
কোন হৃদয়বান ব্যক্তি শিশু মস্তফার কোন খোঁজ পেলে তার বাবা মনসুর আলমের ০১৭৪২৬০০৫১৯ বা মাতা রুমা বেগমের ০১৭৫২৯১১৩৪৮ মোবাইল নম্বরে অথবা পটুয়াখালী সদর থানায় অবহিত করার জন্য বিশেষভাবে অনুরোধ করেছেন বাবা-মাসহ স্বজনরা।