জালাল আহমেদ, প্রধান প্রতিবেদকঃ বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল-বিএনপি’র জাতীয় নির্বাহী কমিটির ভাইস চেয়ারম্যান সাবেক স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী এয়ার ভাইস মার্শাল (অবঃ) আলতাফ হোসেন চৌধুরী বলেছেন, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ঘোষিত ৩১ দফা ছিলো আওয়ামী ফ্যাসিবাদ বিরোধী যুগপৎ আন্দোলনের ভিত্তি। এই ৩১ দফা হচ্ছে এ দেশের মানুষের মুক্তির সনদ। রাষ্ট্র কাঠামো মেরামতের এই রূপরেখা বাস্তবায়ন হলে সাধারণ মানুষের স্বপ্ন পূরণ হবে। এ লক্ষ্যে সবাইকে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে হবে। বিএনপি’র ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান দেশ ও জনগণের কল্যাণে কাজ করেন। অসহায় নিপীড়িত মানুষের পাশে দাঁড়ানোর জন্য দলীয় নেতা কর্মীদের সবসময় বাস্তব ও সময়োপযোগী দিক নির্দেশনা দিয়ে আসছেন।
তিনি শুক্রবার (২৭ ডিসেম্বর) সকাল সাড়ে ১০ টায় পটুয়াখালীস্থ তার নিজস্ব বাসভবন সুরাইয়া ভবনে আয়োজিত জনাকীর্ণ সংবাদ সম্মেলনে মহান মুক্তিযুদ্ধে শহীদ মুক্তিযোদ্ধাদের ও স্বাধীনতার ঘোষক “জেড” ফোর্সের প্রধান শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান এবং জুলাই-আগস্ট গণঅভ্যুল্থানে নিহত বীর শহীদদের প্রতি বিনম্র শ্রদ্ধা জানিয়ে এ কথা বলেন।
তিনি বলেন, ভারতের অখন্ড ভারত রাষ্ট্র করার স্বপ্ন দুঃস্বপ্ন থেকে যাবে। এ স্বপ্ন কখনো বাস্তবে রুপ নেবে না। স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশকে খন্ড খন্ড করার দুঃসাহস দেখিয়ে দু’দেশের মধ্যে দুরত্ব না বাড়ানোর আহবান জানিয়ে সাবেক মন্ত্রী আলতাফ হোসেন চৌধুরী বলেন, আমরা ভারতের সাথে বন্ধুত্ব চাই সম-মর্যাদার ভিত্তিতে। সংবাদ সম্মেলনে আলতাফ হোসেন চৌধুরী ১৬ ডিসেম্বর বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে বিজয় দিবসকে ১৯৭১ সালে ভারতের বিজয় বর্ননা করে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির স্ট্যাটাসের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানান।
আলতাফ চৌধুরী আরো বলেন, ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মুখে ফ্যাসিস্ট হাসিনা পালিয়ে গেলেও পলাতক শেখ হাসিনা ও তার প্রেতাত্মারা ভারতে বসে ষড়যন্ত্র করছে। বাংলাদেশ নিয়ে মিথ্যা প্রচারণা চালানো হচ্ছে। বিভ্রান্তি সৃষ্টি করে দেশকে বিপদে ফেলার চেষ্টা চলছে। এই ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে আমাদের সবাইকে রুখে দাঁড়াতে হবে। ভারত সব সময় আওয়ামী লীগ, শেখ মুজিব, শেখ হাসিনার বাইরে কখনো অন্য কোনো চিন্তা করতে পারে না। ভারত বিগত ৫৩ বছরে মুক্তিযুদ্ধের সময় থেকে আজ পর্যন্ত আমাদের বন্ধুত্ব, আমাদের কৃতজ্ঞতাকে তারা তাদের স্বার্থে ব্যবহার করার চেষ্টা করেছে।
ফ্যাসিস্ট আওয়ামীলীগ সরকারের ১৬ বছরের নির্যাতন-নিপীড়ন সয়ে ও জীবন দিয়ে আমাদের নেতাকর্মী ও সাধারণ মানুষ আন্দোলন সফল করেছে। বিপুল সংখ্যাগরিষ্ঠ জনগণের হৃদয় ও গণতান্ত্রিক রাজনীতির অভিধান থেকে আওয়ামী লীগের নাম মুছে গেছে। তাদের হাতে রচিত হয়েছে বাংলাদেশের গণতন্ত্র হত্যার কলঙ্কিত অধ্যায়। এই গণঅভ্যুত্থানের অন্যতম দিক হচ্ছে একটি নির্বাচিত সরকার। সেজন্য অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ জাতীয় নির্বাচনের মধ্য দিয়ে সংকট কাটাতে হবে।
তিনি বলেন, বাংলাদেশের মানুষ আগামী দিনের দেশনায়ক হিসেবে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে বরণ করার জন্য অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছেন। মহান সৃষ্টিকর্তা আল্লাহ’র অনুগ্রহ রয়েছে বলেই তারেক রহমানের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রের বিষাক্ত জাল ছিন্নভিন্ন হয়ে গেছে। তারেক রহমানের নেতৃত্বে বাংলাদেশ ধ্বংসস্তুুপ থেকে এগিয়ে যাবে সম্মৃদ্ধির পথে।
সংবাদ সম্মেলনে বিএনপি নেতা আলতাফ হোসেন চৌধুরী সাংবাদিকদের উদ্দেশ্য করে বলেন, আপনারা জাতির বিবেক। আপনাদের ঐতিহাসিক ভূমিকা রয়েছে। দেশ ও জাতির ক্রান্তিকালে রাষ্ট্রের চতুর্থ স্তম্ভ হিসেবে আপনারা সাংবাদিকরা আরও বেগবান হবেন।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন জেলা বিএনপির নেতা মাকসুদ আহমেদ বায়জিদ পান্না, জেলা বারের সভাপতি এটিএম মোজাম্মেল হোসেন তপন, জেলা জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের সভাপতি এ্যাড. মো. মোহসীন উদ্দিন, বীর মুক্তিযোদ্ধা এসএ জলিল হিরু, জেলা মহিলা দলের নেত্রী লায়লা ইয়াসমিন, জেসমিন জাফর, নাজমুন নাহার, এ্যাড. সুজন, এ্যাড. আনিস, সায়্যিদ তালুকদার, দুলাল মাদবর ও মুস্তাফিজুর রহমান রুমীসহ বিপুল সংখক নেতা-কর্মী।
পরে তিনি পটুয়াখালী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল পরিদর্শন করেন। এ সময় তিনি অসুস্থ দলীয় কর্মীসহ সাধারণ রোগীদের খোঁজ খবর নেন। এ সময় বিএনপি নেতা আলতাফ হোসেন চৌধুরীর সাথে ছিলেন হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডাঃ দিলরুবা ইয়াসমিন লিজা, বারের সভাপতি এটিএম মোজাম্মেল হোসেন তপন, এ্যাড. মোহসীনসহ বিএনপি, মহিলাদল, যুবদল ও ছাত্রদলের নেতৃবৃন্দ।