1. info@www.southbdnews24.com : 𝐒𝐨𝐮𝐭𝐡 𝐁𝐃 𝐍𝐞𝐰𝐬 𝟐𝟒 :
বৃহস্পতিবার, ১০ এপ্রিল ২০২৫, ০৯:৫৬ পূর্বাহ্ন
সর্বশেষ :
পটুয়াখালীতে ৭৫ পিছ ই*য়া*বাসহ এক মা*দক ব্যবসায়ী গ্রে*ফতা*র পটুয়াখালীতে ৭ দফা দাবীতে প্রাণিসম্পদ এআই টেকনিশিয়ান কল্যান সমিতির শান্তিপূর্ণ সমাবেশ ও মানববন্ধন বাউফলের এক হ*ত্যা মামলায় ২৩ জনের যাবজ্জীবন কা*রাদ*ণ্ড পটুয়াখালীতে জমিয়াতে হিযবুল্লাহ’র উদ্যোগে মানববন্ধন ও বি*ক্ষো*ভ মিছিল গা*জায় গ*ণহ*ত্যার প্রতি*বাদে পটুয়াখালীতে ছাত্রদলের বি*ক্ষো*ভ মিছিল বাউফলে ঝাটকা সংরক্ষণ সপ্তাহ নিয়ে আলোচনা ও নৌকা বাইচ অনুষ্ঠিত পটুয়াখালীতে বিভিন্ন আয়োজনে স্কাউটস দিবস পালিত ফি*লিস্তি*নে ব*র্বরো*চিত হা*মলা*র প্রতি*বাদে গৌরনদীতে বি*ক্ষো*ভ ‘বাংলাদেশের রাজনীতি’ ফেক আইডি চালানো সন্দেহে আটক সিথীর জামিন ফি*লিস্তি*নে ই*সরা*ইলি ব*র্বর হা*মলা*র প্রতিবাদে পটুয়াখালীতে কয়েক হাজার নারী-পুরুষের বি*ক্ষো*ভ মিছিল

ঘূর্নিঝড় রিমালের তান্ডবে পটুয়াখালী জেলায় ৪৭৪টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শিক্ষা কার্যক্রম ব্যাহত, সংস্কারে প্রয়োজন ২০ কোটি টাকা

জালাল আহমেদ, প্রধান প্রতিবেদকঃ
  • প্রকাশিত: বুধবার, ৫ জুন, ২০২৪
  • ১৪৩ বার পড়া হয়েছে

জালাল আহমেদ, প্রধান প্রতিবেদকঃ পটুয়াখালীতে ঘূর্নিঝড় রিমালের তান্ডবে ৪৭৪টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ক্ষতিগ্রস্থ , শত শত শিক্ষার্থী পড়েছে বিপাকে। ক্ষতিগ্রস্থ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠাগুলো সংস্কারে প্রয়োজন প্রায় ২০ কোটি টাকা বলেছেন সংশ্লিস্ট কর্মকর্তাগন। সাম্প্রতিক ভয়াবহ ঘূর্ণিঝড় রিমালের’ তান্ডবে পটুয়াখালীতে অন্যান্য অবকাঠামোর পাশাপাশি ৪৭৪টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। এর মধ্যে ২৫৬ টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও ২১৮ টি মাধ্যমিক বিদ্যালয়, কলেজ ও মাদ্রাসাসহ বিভিন্ন পর্যায়ের প্রতিষ্ঠান।

গত ২৬ ও ২৭ মে দু‘দিন ধরে ঘুর্ণিঝড় রিমাল পটুয়াখালীসহ দেশের উপকূলে তান্ডব চালায়। ঘূর্নিঝড়ে প্রবল বাতাসের সাথে ভারী বর্ষণে উপকূলীয় এলাকায় ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়। অসংখ্য গাছপালা উপড়ে যায়, ঘূর্নিঝড় রিমাল’র জলোচ্ছ্বাসে জেলায় ৮৪ হাজার ৫০০ পরিবারের ৩ লাখ ৩৮ হাজার লোক ক্ষতিগ্রস্থ হয়। ৬ হাজার ৮২ টি বাড়িঘর সম্পূর্ন এবং ৩১ হাজার ৩৬৪ টি আংশিক ক্ষতিগ্রস্থ হয়। এসব অবকাঠামো ক্ষয়ক্ষতির পাশাপাশি ৪৭৪ টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানও ক্ষতিগ্রস্থ হয়।

জেলার বিভিন্ন স্থানে ঘুরে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির চিত্র দেখা গেছে। কলাপাড়া উপজেলায় সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে মেনহাজপুর হাক্কানী মাধ্যমিক বিদ্যালয়। প্রধান শিক্ষক মো. আশরাফ উজ্জামান জানান, প্রবল বাতাসে দুমড়ে-মুচড়ে মাটির সাথে মিশে আছে প্রতিষ্ঠানটি। আবার কিছু অংশের টিনের চালা পুরোটাই উড়ে গেছে। শিক্ষার্থীদের বসার বেঞ্চগুলো এখন খোলা আকাশের নিচে। এমতাবস্থায় শিক্ষা কার্যক্রম চালানো অসম্ভব হয়ে পড়েছে। ২৫০ জন শিক্ষার্থী এখানে পড়াশোনা করে।

অষ্টম শ্রেণির ছাত্র রবিউল হোসেন বলেন, ঘূর্ণিঝড়ে আমাদের স্কুলটি সম্পুর্ণ বিধ্বস্থ হওয়ায় এখন আমরা লেখাপড়া করতে পারছি না। মো. জলিল নামের এক অভিভাবক বলেন, এই স্কুলটি ছাড়া আমাদের ছেলেমেয়েদের পড়াশোনার কোনো স্কুল নেই। তাই যত দ্রুত সম্ভব স্কুলটি মেরামত করার জন্য উপজেলা প্রশাসনের কাছে অনুরোধ করছি।

কলাপাড়া উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার মো. মনিরুজ্জামান খান বলেন, কলাপাড়া উপজেলায় এখন পর্যন্ত ৪টি কলেজ, ১২টি স্কুল ও ২৫টি মাদরাসা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত প্রতিষ্ঠানগুলোর অধিকাংশই টিনশেডের ঘর। উপজেলায় প্রায় দেড় কোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে। বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করেছি।

গলাচিপা উপজেলার আমখোলা হাট সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পুরাতন ভবন ভেঙ্গে ১ কোটি ৮৯ লাখ টাকা ব্যয়ে ৪-তলা বিশিষ্ট নতুন ভবন নির্মান কাজ শুরু হয় ২০১৯ সালে। কিন্তু আদালতে মামলা সংক্রান্ত জটিলতায় ভবনটির নির্মাণ কাজ বন্ধ হয়ে গেলে পার্শবর্তী আমখোলা কলেজের একটি পরিত্যক্ত টিন শেডের ঘরে ক্লাস চালানো হচ্ছিল। এই ঘূর্ণিঝড়ে ওই ঘরটির টিনের চালা ক্ষতিগ্রস্থ হওয়ায় স্কুলটির শিক্ষার্থীদের লেখাপড়া মারাত্মাকভাবে ব্যাহত হচ্ছে।স্কুলের ৪র্থ শ্রেনীর শিক্ষার্থী আসাদুজ্জামান জানান, ঝড়ে স্কুলের ক্ষতি হয়েছে, এখন আমাদের লেখাপড়া করতে কষ্ট হয়।

প্রধান শিক্ষক আবু জাফর জানান, ১৯৩২ সালে প্রতিষ্ঠিত এ স্কুলটিতে ৩৮৭ জন শিক্ষার্থী আছে। স্কুল ভবন নির্মাণে ৫ বছর ধরে অচলাবস্থা চলছিল। প্রশাসনের হস্তক্ষেপে সমস্যা সমাধান হয়েছে এবং সম্প্রতি ঠিকাদার কাজ শুরু করেছেন। তবে কলেজের পরিত্যাক্ত একটি ভবনে ক্লাস চালাতে পারলেও সেটি ঘুর্ণিঝড়ে বিধ্বস্থ হওয়ায় আমরা বিপাকে পড়েছি।

পটুয়াখালী জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মোল্লা বখতিয়ার রহমান জানান, ২৫৬টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ঘূর্ণিঝড়ে ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। এসব বিদ্যালয়ের মধ্যে সর্বাধিক কলাপাড়া উপজেলায় ৭৩টি, গলাচিপায় ৬৯ টি, রাঙ্গাবালীতে ৩১ টি, দশমিনায় ২৭টি, মির্জাগঞ্জে ২১টি, দুমকিতে ১৬টি, বাউফলে ১১টি, পটুয়াখালী সদর উপজেলায় ৮ টি। এসব বিদ্যালয় সংস্কার করতে সাড়ে ৪ কোটি টাকা প্রয়োজন। বিষয়টি উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হয়েছে।

এদিকে পটুয়াখালী জেলায় মাধ্যমিক, উচ্চ মাধ্যমিক ও মাদ্রাসাসহ ২১৮ টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ঘূর্ণিঝড়ে ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। এসব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মধ্যে রয়েছে কলাপাড়ায় ৪৯টি, গলাচিপায় ৪২টি, সদর উপজেলায় ৩৪টি, দশমিনায় ২৯টি, বাউফলে ২২টি, মির্জাগঞ্জে ১৬টি, দুমকিতে ৮টি ও রাঙ্গাবালীতে ৭টি।

এ ব্যাপারে জেলা শিক্ষা অফিসার মুহাঃ মুজিবুর রহমান জানান, ক্ষতিগ্রস্থ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের তালিকা তৈরি করে প্রয়োজণীয় ব্যবস্থা নেয়ার জন্য উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠানো হয়েছে। এসব প্রতিষ্ঠান সংষ্কারে প্রায় সাড়ে ১৫ কোটি টাকা প্রয়োজন।

সদর উপজেলার মাদারবুনিয়া ইউনিয়নের চালিতাবুনিয়া নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সুভল চন্দ্র শীল জানান, ১৯৮৪ সালে বিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। বিদ্যালয়ে বর্তমানে দেড় শতাধিক ছাত্র-ছাত্রী রয়েছে। অধিকাংশই মেয়ে। ঘূর্নিঝড়ে বিদ্যালয়টি মাটির সাথে মিশে আছে। এতে ক্ষতি হয়েছে ৬ লক্ষাধিক টাকা। এটি সংস্কার করতে কমপক্ষে ১০ লাক্ষাধিক টাকার প্রয়োজন হবে। এ ক্ষতি সদর উপজেলা ইউএনওকে লিখিতভাবে অবহিত করেছি। পাশের সাইক্লোন কাম সরকারী প্রাথমিক স্কুল ভবনের নীচে কোনরকম ক্লাস করানো হচ্ছে। তাও বেঞ্চের অভাবে শিক্ষকদের পাঠদান ও শিক্ষার্থীদের পাঠগ্রহনে সমস্যার সৃষ্টি হচ্ছে। তিনি বলেন, বিদ্যালয়টি দ্রুত সংস্কার প্রয়োজন। তা-না-হলে অত্র এলাকার ছেলে- মেয়েদের লেখাপড়ায় দারুনভাবে ক্ষতির শঙ্কা রয়েছে।

সংবাদটি শেয়ার করুন

আরো সংবাদ পড়ুন
সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত
প্রযুক্তি সহায়তায়: ইয়োলো হোস্ট