মো: রিয়াজুল ইসলামঃ পটুয়াখালীর দুমকীতে প্রায়ই গরু চুরির ঘটনা ঘটছে। এতে সব সময় আতঙ্কে রাত পার করছেন গেরস্তেরা। অপরদিকে চোরের আতঙ্কে অসহায় হয়ে গরু পালন ছেড়ে দিয়েছেন তারা। তাদের দাবী থানায় সাধারণ ডায়েরি করা হলেও তা আর আলোর মুখ দেখে না। এদিকে পর্যালোচনায় উঠে এসেছে গত কয়েক মাসের ব্যবধানে উপজেলার মুরাদিয়া, শ্রীরামপুর ইউনিয়নে বেশকয়েকটি গরু চুরির ঘটনা।
সরেজমিনে জানা যায়, গত সোমবার দিবাগত রাতে মুরাদিয়া ইউনিয়নের ৬নং ওয়ার্ডের ভক্ত বাড়ির ক্ষিতিষ চন্দ্র ভক্তের গোয়াল ঘর থেকে ৬টি গরু নিয়ে যায় সংঘবদ্ধ একটি চোরচক্র। একই ভাবে কয়েক বছর আগে ক্ষিতিষ ভক্তের ছোট ভাই জগদীশ চন্দ্র ভক্তের ৫টি গরু নিয়ে যায়। গত ৭জুন দিবাগত রাতে মুরাদিয়া ৫নং ওয়ার্ডের কলবাড়ি বাজারের ব্যবসায়ী তাইবুর রহমান মাঝির ৪টি, তার কয়েক দিন আগে মুরাদিয়া ইউনিয়নের ৫নং ওয়ার্ডের আবু সালাম আকনের ২টি, শ্রীরামপুর ইউনিয়নের ৫নং ওয়ার্ডের মাওঃ জসিম উদ্দিন ঘরামীর ২টি, মুরাদিয়া ইউনিয়নের ৫নং ওয়ার্ডের জাহাঙ্গীর সিকদারের ৩টি ও কামাল হাওলাদারের ৪টি গরু নিয়ে যায় একটি চোরচক্র। এ ছাড়াও পার্শ্ববর্তী পটুয়াখালী সদর উপজেলার লাউকাঠী ইউনিয়নের ২নং ওয়ার্ডের গাজী বাড়ির নাসির গাজীর ৪টি ও বেল্লাল গাজীর ২টি গরু একই রাতে চুরি হয়। এছাড়াও কয়েক মাস পূর্বে লোহালিয়া নদীতে ট্রলার যোগে গরু চুরি করে পালানোর সময় মুরাদিয়ার জনসাধারণের হাতে ধরা পড়ে এক চোর।
গরু চুরির এসব ঘটনায় দুমকী থানায় একাধিক জিডি ও মামলা হয়েছে বলে একাধিক সূত্রে জানা যায়। এব্যাপারে এক ভুক্তভোগী ক্ষিতিষ চন্দ্র ভক্তের ছেলে বলেন, "সোমবার রাতে আমাদের গোয়াল ঘর থেকে ৮টি গরুর ৬টিই গভীর রাতে নিয়ে যায় চোরেরা। আমরা একেবারে নিঃস্ব হয়ে গেলাম, ৬টি গরুর মূল্য ৪/৫ লক্ষ টাকা, এ অবস্থায় কি করব বুঝতে পারছি না। এছাড়াও আমার মা ক্যান্সারের রোগী।" চোর চিনতে পারছেন কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, "চোর চিনতে পারি নাই ঠিকই তবে এলাকার লোকজন এর সাথে জড়িত বলে বিভিন্নজনে বলাবলি করে এবং আমারও তাই মনে হয়।"
অপর এক ভুক্তভোগী তাইবুর রহমান মাঝি বলেন, "আমার ৪টি গরু চুরির ঘটনায় দুমকী থানায় ২ জনকে আসামী করে মামলা দায়ের করি। কিন্তু অদ্যাবধি কোন চোর আটক করতে পারেনি পুলিশ।"
এ ব্যাপারে দুমকী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) তারেক মোহাম্মদ আবদুল হান্নান বলেন, "মুরাদিয়া ইউনিয়নে কয়েকটি গরু চুরির ঘটনায় আমরা খুবই তৎপর। আশা করি স্বল্প সময়ের মধ্যেই সংঘবদ্ধ চোরচক্রকে আটক করতে সক্ষম হব এবং বিট পুলিশং, গ্রাম পুলিশ ও থানা পুলিশের মাধ্যমে গরু চুরি রোধে ব্যাপক প্রচার প্রচারণা চলমান রয়েছে।"
দুমকী উপজেলার চেয়ারম্যান কাওসার আমিন হাওলাদার বলেন, "এটি একটি দুঃখজনক ঘটনা। ইতিপূর্বে আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী এব্যাপারে কাজ করে যাচ্ছে। চোর চক্রকে দমনের লক্ষ্যে আগামী আইন শৃঙ্খলা মিটিংয়ে উপস্থাপন করা হবে এবং যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।"